নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের শহর থেকে গ্রাম—সব জায়গায় তরুণদের বড় একটি অংশ বেকারত্বে ভুগছে। চাকরির অভাব, জীবিকার অনিশ্চয়তা, আর্থিক সংকটে অনেকেই দিশেহারা। কিন্তু একটু সাহস আর নতুন চিন্তা করলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্প জায়গায় এলাচি চাষ বেকারদের জন্য হতে পারে লাভজনক ব্যবসার নতুন দিগন্ত।

কেন এলাচি?

বাংলাদেশে এলাচির চাহিদা সবসময়ই বেশি। হোটেল, মিষ্টির দোকান, গৃহস্থালি—সবখানেই এই মশলার ব্যবহার অপরিহার্য। অথচ দেশের উৎপাদন পর্যাপ্ত নয়, প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা দিয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তাই স্থানীয়ভাবে এলাচি উৎপাদন করলে নিশ্চিত বাজার ও ভালো দাম—দুটোই পাওয়া যায়।

কীভাবে শুরু করা যাবে?

  • অল্প জায়গাই যথেষ্ট: বাড়ির আঙিনা, ছাদ, কিংবা সামান্য খালি জমি—যেকোনো জায়গায় টব বা বস্তায় এলাচি চাষ করা যায়।

  • ফলদায়ী গাছ কিনুন: বীজ থেকে চাষ করলে ফলন পেতে ২–৩ বছর সময় লাগে। তাই নার্সারি বা হর্টিকালচার সেন্টার থেকে ২ বছরের বেশি বয়সী ফলদায়ী গাছ কিনে নিলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়।

  • কম খরচে শুরু: একটি ফলদায়ী এলাচি গাছের দাম গড়ে ১,০০০ টাকা। শুরুতে ৫–১০টি গাছ কিনে চাষ শুরু করলে বড় পুঁজি লাগে না।

  • পরিচর্যা সহজ: আর্দ্রতা, ছায়া ও নিয়মিত পানি থাকলেই এলাচি ভালো হয়। বড় কোনো প্রযুক্তি বা যন্ত্রপাতির দরকার নেই।

সম্ভাব্য আয়

একটি পরিণত এলাচি গাছ থেকে বছরে গড়ে ৩০০–৫০০ গ্রাম শুকনা এলাচ পাওয়া যায়। বর্তমানে বাজারে এক কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২,৫০০–৩,৫০০ টাকায়। অর্থাৎ মাত্র ১০টি গাছ থেকেই বছরে ৮,০০০–১২,০০০ টাকার পণ্য উৎপাদন সম্ভব। গাছের সংখ্যা বাড়ালে আয়ের অঙ্কও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

কোথায় পাওয়া যাবে গাছ?

বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির হর্টিকালচার সেন্টার এবং স্থানীয় নার্সারিগুলোতে ফলদায়ী এলাচি গাছ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া কিছু অনলাইন নার্সারি থেকেও অর্ডার করা সম্ভব। তবে কেনার আগে গাছের বয়স ও মান নিশ্চিত করে নিতে হবে।


উপসংহার

চাকরির জন্য অপেক্ষা না করে যারা নিজেরা কিছু করতে চান, তাদের জন্য এলাচি চাষ হতে পারে এক সহজ, লাভজনক এবং দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ। সামান্য জায়গা ও অল্প মূলধন দিয়েই শুরু করা যায় এই ব্যবসা। সময় এসেছে বেকার তরুণদের—“কাজ খুঁজে নাও, নয়তো কাজ তৈরি করো”—এই মন্ত্রে এগিয়ে আসার।